ঘরোয়া পদ্ধতিতে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়
আমাদের প্রত্যেকেরই কম-বেশি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে। গ্যাস্ট্রিক সাধারণত ছোট বড় সকল বয়সে হয়ে থাকে, আর এই সমস্যা সমাধানের বিভিন্ন মাধ্যম এবং উপায় রয়েছে । এরমধ্যে সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হলো ঘরোয়া পদ্ধতিতে গ্যাস্ট্রিক দূর করা। আমরা অনেকেই জানিনা যে ঘরোয়া পদ্ধতিতে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা সমাধান করা যায় ।গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যা হলেও বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা যায় যেমনঃ পেটে ব্যথা, বুকে ব্যথা, বমি বমি ভাব হওয়া।
এছাড়াও অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। আজ আমরা গ্যাস্ট্রিক ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিভাবে দূর করা যায় তা সম্পর্কে জানবো। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলে সম্পূর্ণ বিষয়টি ধারণা পাবেন।
ভূমিকা
মানুষের দৈনন্দিন জীবনে নানা ধরনের অসুস্থতা লেগেই থাকে তার মধ্যে গ্যাস্ট্রিক একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এটি মানুষের জন্য কষ্টদায়ক এবং ভয়ঙ্কর হতে পারে। গ্যাস্ট্রিকের সমাধানের জন্য আমাদের কিছু ঘরোয়া উপায় অথবা টেকনিক রয়েছে যার মাধ্যমে আমরা এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি। আমরা খাবার পানি,পেঁপে,আলুর রস, আদা ,কালিজিরা সহ আরো যে সকল ঘরোয়া খাবার গ্রহণ করলে গ্যাস্ট্রিক দূর হবে তা বিশ্লেষণ করবে।
আদার মাধ্যমে গ্যাস্ট্রিক দূর করা
আমাদের প্রত্যেকের বাড়িতে রান্নার জন্য আদার প্রয়োজন হয়। আর আদাতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা গ্যাস্ট্রিক, বুকে জ্বালা পোড়া, বদহজম সহ আরো নানা ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- আদা রস করে তার সাথে মধু দিয়েও খেতে পারেন। তবে এটি রাতে খালি পেটে শোয়ার আগে খেয়ে নিলে সবচেয়ে ভালো উপকার পাবেন।
- এরপর আদা ছোট কুচি করে পানিতে দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ঢেকে রাখুন, এরপর খাঁটি মধু মিশিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ২ থেকে ৩ বার পান করুন।
- আর আস্ত আদা খোসা ছরিয়ে চিবিয়ে খেতে পারবেন।
কালিজিরা খেয়ে গ্যাস্ট্রিক দূর করা
কালিজিরা গ্যাস্ট্রিক দূর করার জন্য একটি অন্যতম মাধ্যম। কালিজিরা কিছু উপাদান রয়েছে যা গ্যাস্ট্রিক খুব সহজে দূর করতে পারে।
- আপনি প্রতিদিন রাতে শোয়ার আগে খালি পেটে এবং সকালে খালি পেটে কালিজিরা সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
- কালিজিরা এবং মধু একসঙ্গে মিশিয়ে খেলে গ্যাস্ট্রিক সহ বিভিন্ন ছোট বড় নানা ধরনের রোগের হাত থেকে বাঁচতে পারেন।
- কালিজিরার তেলের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে আপনার বদহজম, খাবারের রুচি না থাকা সহ শরীরের সকল রোগ থেকে মুক্তি পাবেন।
- আপনি যদি কালিজিরা চিবিয়ে খান তাতেও আপনি উপকার পাবেন।
দই দিয়ে গ্যাস্ট্রিক দূর করা
আমরা ইতিপূর্বে আদা, মধু, কালোজিরার দিয়ে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ভালো করার বিভিন্ন নিয়ম কানুন জেনেছি। ঠিক তেমনি দই এর মাধ্যমে গ্যাস্ট্রিক সহ সকল ধরনের রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
- আপনি প্রতিদিন ২ থেকে ৩ চামচ পরিমাণ দই খেতে পারেন এতে আপনার পাকস্থলী সুস্থ থাকবেন।
- দই আমাদের পাকস্থলীতে থাকা এইচ পাইলোটি নামক ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে রক্ষা করে যা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হওয়ার অন্যতম কারণ। এছাড়াও দই আমাদের শরীরের সকল রোগ জীবাণু প্রতিরক্ষার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- দইয়ের সঙ্গে কলা ও মধু একসঙ্গে মিক্স করে পান করতে পারেন এতে আরো তাড়াতাড়ি গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর হবে।
পানি পানের মাধ্যমে গ্যাস্ট্রিক দূর করা
- গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সহ পেটে জ্বালাপোড়া, পেট ফাঁপা এরকম নানা ধরনের সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য পানি পানের উপকারিতা অপরিসীম।
- প্রতিটি মানুষের দিনে কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ লিটার পানি পান করা আবশ্যক।
- পানি পান করার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সাথে আমাদের কিডনি ভালো থাকে এবং আমাদের ব্রেন সতেজ থাকে।আমাদের দেহের গ্যাস্ট্রিক,হজম শক্তি ও পরিপাকতন্ত্র সবকিছু সুস্থ থাকে।
পুদিনা পাতার সাহায্যে গ্যাস্ট্রিক দূর করা
- গ্যাসের সমস্যা দূর করার আরেকটি মাধ্যম হলো পুদিনা পাতা। আপনি যদি প্রতিদিন ২-৩ টা পুদিনা পাতা ভালোভাবে ধুয়ে চিবিয়ে খাবেন।
- চিবিয়ে খেতে তিতা লাগে আপনি চাইলে একটি গ্লাসে কিছু পুদিনা পাতা নিয়ে ভালোভাবে সেদ্ধ করে জুস বানিয়ে খেতে পারেন।
মেথির দ্বারা গ্যাস্ট্রিক দূর করা
আমরা সবাই মেথি একটি ব্যাবহার জানি সেটি হলো মাথার চুল পড়া বন্ধের ব্যাবহার কিন্তু ছাড়াও যে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করা যায় তা যানেনা সচরাচর।
- এক গ্লাস পানি নিয়ে তার মধ্যে ১ চামচ মেথিগুড়া মিশিয়ে খাবেন।
- আর না হলে ১ চামচ মেথি দানা একটি গ্লাসে পানি নিয়ে ভিজিয়ে রাখবেন রাতে এবং সকালে তা খালি পেটে খাবেন।
পেঁপের মাধ্যমে গ্যাস্ট্রিক দূর করা
- পেঁপেতে থাকে এক ধরনের এনজাইম আমাদের দেহের হজম করার ক্ষমতা সহজ করে ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রোধ হয় তাই আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যাভাসে পেঁপে রাখা জরুরি।
- আর আপনি চাইলে দুই টুকরা পেঁপে প্রতিদিন খাবার পরে যে কোন সময় খেতে পারেন এতে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নির্বিশেষে ধ্বংস হয়ে যাবে।
শেষ কথা
আমাদের এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা যদি খুব বেশি আকারে হয় তাহলে আমাদের উচিত অবশ্যই একটি ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। কেননা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বেশি পর্যায়ে গেলে তা ঘরোয়া টিপ্স বা উপাদান দিয়ে ভালো করা সম্ভব না। আর সব খাবার নিয়ম মত খেতে হবে পেট পরিপূর্ণভাবে খাওয়া যাবেনা।
পেটে তিন ভাগের এক ভাগ খালি রাখতে হবে তাহলে আমাদের গ্যাস্ট্রিকের মতো সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব।আর সবশেষে অসংখ্য ধন্যবাদ ধৈর্য সহকারে এই আর্টিকেলটি করার জন্য। আপনার দীর্ঘায়ু কামনা করি।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url